লতা মঙ্গেশকর

 
 
আকাশ প্রদীপ জ্বলে দূরের তারার পানে চেয়ে,
আমার নয়ন দু'টি শুধুই তোমারে চাহে
ব্যথার বাদলে যায় ছেয়ে।।
বয়ে চলে আঁধি আর রাত্রি
আমি যেন দিশাহীন যাত্রী
দূর অজানার পারে
আকুল আশার খেয়া বেয়ে।।
কত কাল আর কত কাল
এই পথচলা ওগো চলবে
কত রাত এই হিয়া
আকাশ প্রদীপ হয়ে জ্বলবে
কোনো রাতে মনে কি গো পড়বে
ব্যথা হয়ে আঁখি জল ঝরবে
বাতাস আকুল হবে 
তোমার নিঃশ্বাসটুকু পেয়ে।।
 

ওগো আর কিছু তো নয়,
বিদায় নেবার আগে তাই
তোমারি নয়নে পাওয়া তোমারি সুরে গাওয়া
এ গান খানি রেখে যাই।।

বরষা হয়ে তুমি আকাশ ভরে
হৃদয় মরুতে মম পরেছ ঝরে
সরস করিয়া মোরে যে ফুল ফোটালে ভোরে
এমালা তারি রেখে যাই।

জানিনা কখন মন হারায়ে গেল
সকলি হারায়ে বুঝি সকলি পেল
আজকে আশার নদী উদাসে শুকালো যদি
এ হৃদয় টুকু রেখে যাই।

ওগো আর কিছু তো নয়,
বিদায় নেবার আগে তাই
তোমারি নয়নে পাওয়া তোমারি সুরে গাওয়া
এ গান খানি রেখে যাই।।

যারে যারে উড়ে যারে পাখি
ফুরালো প্রাণের মেলা
শেষ হয়ে এলো বেলা
আর কেন মিছে তোরে বেঁধে রাখি।।

আকাশে আকাশে ফিরে
যা ফিরে আপন নীড়ে
শ্যামল মাটির বনছায়।

শুধু মনে মনে তোকে ডাকি
চাহিনা খেলিতে খেলা
শেষ হয়ে এলো বেলা
আর কেন মিছে তোরে বেঁধে রাখি।।

আমারই স্বপ্ন হয়ে
কত কি যে গেছ কয়ে
হৃদয় পিঞ্জরে বসিয়া।
জানি সবই রয়ে গেল বাকী
এবারে ভাসাব ভেলা
শেষ হয়ে এলো বেলা
আর কেন মিছে তোরে বেঁধে রাখি।।

আষাঢ় শ্রাবণ, মানে না তো মন
ঝরো ঝরো ঝরো ঝরো ঝরেছে |
তোমাকে আমার মনে পড়েছে ||
আষাঢ় শ্রাবণ, মানে না তো মন
ঝরো ঝরো ঝরো ঝরো ঝরেছে |
তোমাকে আমার মনে পড়েছে ||


আলোর তরীটি বেয়ে দিন চলে যায়
আঁধারে মন জ্বলে তারায় তারায় |
আমার মন কেন শুধু আকুলায়
বরষণ যেন কোথা হয়েছে |
তোমাকে আমার মনে পড়েছে ||
আষাঢ় শ্রাবণ, মানে না তো মন
ঝরো ঝরো ঝরো ঝরো ঝরেছে |
তোমাকে আমার মনে পড়েছে ||


দিও নাকো কোনো কিছু দিও না আমায়
সব কিছু পাওয়া হবে, পেলে গো তোমায় |
চোখের জলেতে বেয়ে সুখ এলো তাই
আজ মন মোহানায় মিশেছে ||
তোমাকে আমার মনে পড়েছে ||
আষাঢ় শ্রাবণ, মানে না তো মন
ঝরো ঝরো ঝরো ঝরো ঝরেছে |
তোমাকে আমার মনে পড়েছে ||


যাবার বেলায় পিছু থেকে ডাক দিয়ে
কেন বলো কাঁদালে আমায় ?
আমার এ মন বুঝি মন নয় !
হাসি আর গানে গানে এতদিন
ফুল ফোটানোর খেলা চলে ছিল,
যে কাঁটা রয়েছে বিঁধে মরমের মাঝে
তার কথা এ মন ভুলে ছিল-----
ব্যথায় ব্যথায় তাকে মনে পড়ে যায় |
স্মৃতির আকাশ থেকে কোনোদিন
হয়তো আমার তুমি মুছে দেবে,
স্বপ্নের রঙে যত ছবি আঁকা হলো
চোখের জলেতে ভেসে যাবে------
যা কিছু গিয়েছে পাওয়া, সে আমার নয় ||

কেন গেল পরবাসে বল বঁধুয়া---
গরজে বরষে মানে না যে তরসে হিয়া ?
মিছে এই ফুলসাজ, ভুল সবই ভুল  ;
দেব না তো কবরীতে মালতী বকুল |
কী হবে কলস ভরে গিয়ে যমুনায় ?
বলে দে, বলে দে সখী ওরে যেন আসে না |
কার অভিসার বলো কার পথ চায়----
কূল ভেঙ্গে বারে বারে কার পানে যায়,
জানি বাঁশি বাজবেই, মন বোঝে না ||

ওরে মন পাখি, কেন ডাকাডাকি, তুই থাক্ না রে গোপনে |
তোর উড়তে আছে মানা রে বন্ধু এই খোলা আশমানে |
উড়তে মানা আকাশে তোর বসতে মানা ডালে,
বাসা বাঁধিতেও মানা কি আছে কপালে-----
বলি ঝড়ে হারাতে তো মানা নাই ?
চক্ষের জল ফেলতে মানা, সুখের কথা ভাবতে মানা,
মরিতে তো মানা নাই ?
ভাসতে মানা অকূলে তোর, ডুবতে মানা জলে,
কূল ভাঙিতেও মানা কি আছে কপালে --
বলি স্রোতে হারাতে তো মানা নাই  ?

রিনিক ঝিনিক ছন্দে যমুনায় কে যায়
কনক কনক কাঁখে কলস অলস পায় পায় |
রিনি ঝিনি রিনি ঝিনি বাজে কিঙ্কিনী চিনি চিনি
অপরূপ মরি কিবা শ্রীমতীর রূপবিতা
ময়ূরী দোলায় গ্রীবা তারি পানে চায় |
তার নয়নকমল কলি, তারি পায়ে দুটি অলি
অকারণে শুধু চলি, কি যে সুখ পায় |
তার শিথিল করবী হতে গরবী করবী ঝরে
বাঁশরীর তালে তালে নাগরী গাগরী ভরে
নীল শাড়ী নিঙাড়িয়া চলিছে মাধবপ্রিয়া
দুরু দুরু করে হিয়া, হায় একি দায় |
আর জাগে হাসি আঁখি কোণে, অভিসার সুখ মনে
কান পেতে শুধু শোনে, পিককুল গায় |


তোমাদের আসরে আজ এই তো প্রথম গাইতে আসা
বিনিময় চাই তোমাদের প্রশংসা আর ভালবাসা
একদিন তানপুরাটার যে তার গুলো নীরব ছিল
কে যেন আজ তার গুলো কে নতুন সুরে জাগিয়ে দিল
প্রাণে যে সুর লাগিয়ে দিল, মনে যে সুর লাগিয়ে দিল
গানই আমার জীবন ওগো, গানই আমার ভালবাসা
তোমাদের আসরে আজ এই তো প্রথম গাইতে আসা
তোমাদের এ গান শুনে একটু যদি ভাললাগে
তবে হব ধন্য আমি তোমাদের প্রশংসারই চেয়ে
ওগো কিছুই তো আর নয়কো দামী
এ হৃদয় ভালবাসার গানেরই এক স্বরলিপি---
জীবনেরই বাঁশীতে যে - এ গান আমি বাজিয়ে যাবো
সুরে যে মন সাজিয়ে যাবো
এগান আমার ফুলের কাছে, ভ্রমরেরই ভাষা
তোমাদের আসরে আজ এই তো প্রথম গাইতে আসা
বিনিময় চাই তোমাদের প্রশংসা আর ভালবাসা
তোমাদের আসরে আজ এই তো প্রথম গাইতে আসা


ভাল করে তুমি চেয়ে দ্যাখো
দ্যাখো তো চিনতে পারো কি না
আমার দু’চোখে চোখ রেখে দ্যাখো
বাজে কি বাজে না মনোবীণা ?

সোনালী বিকেলে গাছের ছায়ায়
মুখোমুখী বসে নীল সন্ধ্যায়
জীবনান্দ তুমি তো শোনাতে
ভেবে দ্যাখো মনে পড়ে কি-না ?

পটভূমিকায়, শহিদ মিনার
নাগরিক চাঁদ উঠেছে আবার
“বনলতা সেন” শোনাবে কে আর
এই আমি আজ তুমি হীনা॥


যদিও রজনী পোহালো তবুও
দিবস কেন যে এলো না এলো না।
সজন মেঘের পরান ঝরিয়া
বরিষণ কেন হলো না হলো না।।
লোকে মরে কলঙ্কীনি নাম দিয়ে
বোঝে না তো কত জ্বালা মন নিয়ে
বলে বলুক লোকে মানি না মানি না
কলঙ্ক আমার ভালো লাগে
পিরিতি আগুনে জীবন সঁপিয়া
জ্বলে যাওয়া আজ হলো না হলো না।।
এমন পথ চলা ভালো লাগে না
আমার অঙ্গ দোলে তরঙ্গে তরঙ্গে
কেউ না বাঁধে যদি পথ হারাবে নদী
ভালো লাগে না লাগে না।
ভালোবেসে মরি যদি সেও ভালো
ঘর বেঁধে যদি মরি আরো ভালো
এসো এসো হে বধূ জ্বলিতে জ্বলিতে
মরণ আমার ভালো লাগে
কপালের লিখা সিঁদুরে ঢাকিয়া
পথ চাওয়া আজ হলো না হলো না।।

আজ নয় গুন গুন গুঞ্জন প্রেমে
চাঁদ ফুল জোছনার গান আর নয়
ওগো প্রিয় মোর খোল বাহু ডোর
পৃথিবী তোমারে চায়।

আর নয় নিস্ফল ক্রন্দন
শুধু নিজের স্বার্থের বন্ধন
খুলে দাও জানালা আসুক
সারা বিশ্বের বেদনার স্পন্দন
ধরনীর ধুলি হোক চন্দন
টিকা তার মাখে আজ
পরে নাও পরে নাও পরে নাও।

কার ঘরে প্রদীপ জ্বলেনি
কার বাছার অন্ন মেলেনি
কার নেই আশ্রয় বর্ষায়
দিন কাটে ভাগ্যের ভরসায়
তুমি হও একজন তাদেরই
কাঁধে আজ তার ভার
তুলে নাও তুলে নাও তুলে নাও।।

আমার মাধবী লতা
ওগো কী আবেশে দোলে
আমি সে-কথা জানিনা
.          আমার কেগো দেবে বলে ?
জানিনা একী হাওয়া
.           ছুঁয়েছে তারে
সেজেছে কেন ফুলে
.          ফুলে পাতা বাহারে
কেন দোলে  ঢেউ তোলে    কেন দোলে হিল্লোলে  ?
.          বুঝিনা একী মায়া
.                          লেগেছে মনে
হয়েছি কেন খুশী
.         খুশী বিনা কারণে
কেন দোলে ঢেউ তোলে       কেন দোলে হিল্লোলে  ?

আমি বলি তোমায় দূরে থাকো
.            তুমি কথা রাখোনা
শুধু মনে মনে কাছে ডাকো
.            তুমি কেন ডাকোনা ?
কত যে তোমারে বোঝাবো তুমি বলোনা
.             তুমি আমার
.             আর আমি তোমার   নয় ছলনা
আহা নয় সুরে সুরে আমার ছবি আঁকোনা |
এ- তীরে সহসা তরণী তুমি বেয়োনা
.             কূলে আমার
.             যদি লাগে জোয়ার ফিরে যেয়োনা
যদি চাও ভোলাতেগো আমায় ভুলে থাকোনা ||

আজ মন চেয়েছে আমি হারিয়ে যাব----
হারিয়ে যাব আমি তোমার সাথে ;
সেই অঙ্গীকারের রাখী পরিয়ে দিতে
কিছু সময় রেখো তোমার হাতে | |
কিছু স্বপ্নে দেখা, কিছু গল্পে শোনা,
ছিল কল্পনা জাল এই প্রাণে বোনা-----
তার অনুরাগের রাঙা তুলির ছোঁয়া
নাও বুলিয়ে নয়নপাতে ||
তুমি ভাসাও আমায় এই চলার স্রোতে
চিরসাথি রইব পথে |
তাই যা দেখি আজ সবই ভালো লাগে
এই নতুন গানের সুরে ছন্দরাগে---
কেন দিনের আলোর মতো সহজ হয়ে
এলে আমার গহন রাতে ||

নিঝুম সন্ধ্যায় পান্থ পাখিরা
বুঝি বা পথ ভুলে যায়----
কুলায়ে যেতে যেতে কি যেন কাকলি
আমারে দিয়ে যেতে চায় ||
দূর পাহাড়ের উদাস মেঘের দেশে
ওই গোধূলির রঙিন সোহাগ মেশে ;
বনের মর্মরে বাতাস চুপি চুপি
কি বাঁশি ফেলে রাখে হায় ||
কোন্ অপরূপ অরূপ রূপের রাগে
সুর হয়ে রয় আমার গানের আগে ;
স্বপন কথাগুলি ফোটে কি ফোটে না,
সুরভি তবু আঁখি ছায় ||

 


সব লাল পাথরই তো চুনি হতে পারে না
সব প্রেম মিলনের মালা পেতে পারে না
পাশাপাশি দুটি ফুল ফোটে যে বাগিচায়
একজন ঠাঁই পায় দেবতার দুটি পায়
সমাধীর বেদী তার ভরে যায় একজন
সব ফুল দেবালয়ে পার্ না তো যেতে হায় |

কেউ বা হাসে সারাটি জীবন অশ্রু ঝরায় কারও বা নয়ন
কেউ বা দু হাতে কেবলই নিতে চায়, কেউ বা কিছু নিতে নয়
শুধু দেবীকে চায়, সুখী তো সকলেই হতে চায় দুনিয়ায়
সুখী কেউ হয় কেউ দুঃখী শুধু রয়ে যায় |

কারও বা আশা হয়গো পূরণ হয়না সফল কারও বা স্বপন
ভিখারী মাটিতে ফেলে যে রতন পারে না দিতে তা কখনও মহাজন
প্রদীপের শিখা কারো ঘর আলো করে যায় |

 

ও মোর ময়না গো / ও মোর ময়না গো
কার কারণে তুমি একলা ?
কার বিহনে বিহনে দিবা নিশি যে উতলা ?
সে তো আসবে না সে তো ফিরবে না ফিরবে না
ও মোর ময়না গো

দূর দূর দূর দুর্ পানে আনমনে চাহিয়া
কি বিরাগের রাগিনী যাও গাহিয়া
দূর দূর দূর দুর্ পানে আনমনে চাহিয়া
কি বিরাগের রাগিনী যাও গাহিয়া
সবুজে সবুজে ভরা বনানী / ফুরাবে ফাগুন বুঝি জানোনি ?
সবুজে সবুজে ভরা বনানী / ফুরাবে ফাগুন বুঝি জানোনি ?
হায়রে হায়রে বুঝি তা জানোনি
ময়না গো
ও মোর ময়না গো
কার কারণে তুমি একলা ?
কার বিহনে বিহনে দিবা নিশি যে উতলা ?
সে তো আসবে না সে তো ফিরবে না ফিরবে না
ও মোর ময়না গো

ঝর ঝর ঝর দু নয়ন ঝরঝর ঝরায়ে
কেন থাকো, বিষাদে মন ভরায়ে ?
ঝর ঝর ঝর দু নয়ন ঝরঝর ঝরায়ে
কেন থাকো, বিষাদে মন ভরায়ে ?
যা কিছু হারায়ে গেল যাকনা
নীল আকাশে মেলো পাখনা
যা কিছু হারায়ে গেল যাকনা
নীল আকাশে মেলো পাখনা
দাওরে দাওরে মেলে পাখনা
ময়না গো
ও মোর ময়না গো
কার কারণে তুমি একলা ?
কার বিহনে বিহনে দিবা নিশি যে উতলা ?
সে তো আসবে না সে তো ফিরবে না ফিরবে না
ও মোর ময়না গো


বলছি তোমার কানে কানে আমার তুমি
বলছি আমার গানে গানে আমার তুমি।

আজকে আমার প্রান পেয়েছে, অনেক নতুন ভাষা
অনেক দিনের স্বপ্ন যে, অনেক দিনের আশা।

তোমায় পেয়ে, হয় যে মনে আর জনমেও সাথী ছিলাম,
আমরা দু’জন মনের সুখে অনেক জনম ঘুরে এলাম।

চিরদিনই থাকবে একই…আমাদের এই ভালবাসা।।

তুমি আমার অনেক আপন মেনে নিয়েও বলে এ মন
হও না তুমি আরও কাছের, হও না তুমি আরও আপন।

এক সাগরে মিলবো বলে…তোমার আমার স্রোতে ভাসা।।


ত ভাই চম্পা জাগরে জাগরে
ঘুম ঘুম থাকে না ঘুমেরই ঘোরে
একটি পারুল বোন আমি তোমার
আমি সকাল সাঝে শত কাজের মাঝে
তোমায় ডেকে ডেকে সারা
দাও সাড়া গো সাড়া।। (ও)

ও সাত ভাই চম্পা গো রাজার কুমার
কোথায় পংখীরাজ ঘোড়া তোমার তলোয়ার।
আজো রাজার বেশে ঘোরে ছদ্ধবেশে
ডাইনী সর্বনাশী রাক্ষসীরা আবার।।

আর রাজবাড়ি সাত রানী মায়ের ঘরে
ফিরে যাব না যাব না যাব না রে।
ঘরে ক্ষুধার জ্বালা, পথে যৌবন জ্বালা
রাজার কুমার আর আসে না ঘোড়ায় চড়ে।।


ঐ গাছের পাতায় রোদের ঝিকিমিকি
আমায় চমকে দাও, দাও, দাও
আমার মন মানে না দেরী আর সয় না।।

ঐ যে ঘুম পাহাড় ও ও ও……।
জেগে বেশ ঘুমিয়ে থাকে কে আমার কাছে থাকে।
কে আমার গানের কথার মানে বোঝে না।
আমার মন মানে না দেরী আর সয় না।।

ঐ যে নীল আকাশ ও ও ও…..।
সে এখন শুধুই হাসে তার কি যায় বা আসে।
আমি যে চেনা দিয়েও রইবো অচেনা।
আমার মন মানে না দেরী আর সয় না।।


প্রেম একবারই এসেছিল নিরবে
আমারই এ দুয়ার প্রান্তে
সে তো হায় মৃদু পায়
এসেছিল পারি নি তো জানতে।।

সে যে এসেছিল বাতাস তো বলে নি
হায় সেই রাতে দীপ মোর জ্বলে নি।

তারে সে আধারে চিনিতে যে পারি নি
আমি পারি নি ফিরায়ে তারে আনতে।।

যে আলো হয়ে এসেছিল কাছে মোর
তারে আজ আলেয়া যে মনে হয়
এ আধারে একাকী এ মন আজ
আধারেরই সাথে শুধু কথা কয়

আজ কাছে তারে এত আমি ডাকি গো
সে যে মরিচিকা হয়ে দেয় ফাকি গো।
ভাগ্যে যে আছে লেখা হায়রে
তারে চিরদিনই হবে জানি মানতে।।

ফেলে আসা স্মৃতি আমার বেদনা জাগায়
মন কেন খুঁজে ফিরে শুধু যে গো তোমায়।।

তুমি তো জানো না, আমিও চিনি না
তবু কেন মন যে হায় তোমাকে চিনতে চায়
মন কেন খুঁজে ফিরে শুধু যে গো তোমায়।।

জীবনের সেই গান, আর তার প্রতিদান
এখন তো জানিনা তার সীমা যে কোথায়
মন কেন খুঁজে ফিরে শুধু যে গো তোমায়।।

মায়া-ভালবাসা, কেন এত জ্বালায়
ভুলিতে চায় সহজে গো ভোলা নাহি যায়
মন কেন খুঁজে ফিরে শুধু যে গো তোমায়।।

 

 

 

কথা- মুকুল দত্ত
সুর -হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
ছবি- মণিহার
শিল্পী- লতা মঙ্গেশকর

কেন গেল পরবাসে বল বঁধুয়া---
গরজে বরষে মানে না যে তরসে হিয়া ?
মিছে এই ফুলসাজ, ভুল সবই ভুল  ;
দেব না তো কবরীতে মালতী বকুল |
কী হবে কলস ভরে গিয়ে যমুনায় ?
বলে দে, বলে দে সখী ওরে যেন আসে না |
কার অভিসার বলো কার পথ চায়----
কূল ভেঙ্গে বারে বারে কার পানে যায়,
জানি বাঁশি বাজবেই, মন বোঝে না ||