তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়

১.
ওগো কন্যা ঘুমাও কত আর
পদ্মকলি নয়ন দু’টি মেলো একবার।।
জানি ওগো পথের পানে চেয়ে
ক্লান্ত চোখে তন্দ্রা এল ছেয়ে
তবু চেয়ে দেখো পথিক এলো কাছে
কন্ঠে যে তার তোমার মণিহার।। 
জেগে আছে রাতের তারা নাম-না-জানা পাখি,
এখনো তো যায়নি লগন, গেল তোমায় ডাকি।
ঘুম নেমেছে অনেক ব্যথার ভারে
কেই বা জানে বলবে তুমি কারে
সে যে এলো অনেক দুখের শেষে
মুছিয়ে দিতে তোমার আঁখিধার।। 
 
 
 
এলো না সে তো এলো না, তাই ডুবুরি ডুবুরি মন
ডুবেও মুক্তা পেল না | মন পেল কি না পেল ----নাই পাক |
এখনি তখনি যখনই ভাবি না মন পাব কিনা পাব,
মেনেও মানি না জেনেও জানি না,ভুলে যাব কিনা যাব
চোখের ঝিনুকে ব্যথার মুকুতা শুধু ঝরে যেতে চায়, একন কি করি উপায় |
মন পেল কি না পেল ---- নাই পাক |
কি ছিল কি আছে, কি হবে কি রবে, কারে ডেকে আর বলি,
কে জানে কে মানে কি ব্যথা এ প্রাণে,  একি জ্বালাতে যে জ্বলি,
ফণীর মনে কি মেলে গো কখনো বিষে দেহ জ্বলে যায়, এমন কি করি উপায় ||
 
 
 
 
কথা- গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার
সুর - নচিকেতা ঘোষ
শিল্পী- তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়

নীলাঞ্জনা রে, এই মধুর নাম,
একি আমার বধূর নাম না কিসের নাম
আমি জানি না, ওরে নীলাঞ্জনা রে,
একি পাখির নাম, না ফুলের নাম
না নদীর নাম ---- আমি জানি না |
তার আকাশ আকাশ চোখ
যখন নালাঞ্জনে নীল, আমার ছন্দ দোলা
আহা পায় রে খুঁজে মিল, ও নীলাঞ্জনা রে |
ওরে পাখি নয়, নদী নয়, ফুল নয়, তারা নয়
তবে সে কি তাকে তবু যে ডাকি, নীলাঞ্জনা রে |
যখন জোনাক জোনাক রাত
দূরে নীল তারাদের ভিড়, তার চোখের তারার ওই
কত স্বপ্ন বাঁধে নীড়, ও নীলাঞ্জনা রে |
আহা নাম তার যাই হোক, তার দু’টি নীল চোখ
চেয়ে যে দেখি তাকে তাই তো ডাকি ----- নীলাঞ্জনা রে |
তাকে মধুর নাম ধ’রে, আমার বধূর নাম ধরে,
আমার দেয়া এ নামে তোমায় ডাকব নীলাঞ্জনা গো ||
 
 
 
 
বেশ তো না হয় সপ্তঋষির অস্ত যাওয়ার প্রহরে হাওয়া,
কথাগুলো সব ক্লান্ত হবে, তবুও তুমি আমারই রবে |
বেশতো না হয় হাসনুহানার গন্ধ ছড়ানো আবেশ ভরানো
এই যে রাত্রি বিদায় লবে, তবুও তো তুমি---
তবুও জানো কি জানো না ফুলেরই এ মালা কি হবে না ভুলেরই সে জ্বালা
হয়ত দ্বিধায় দাও গো বিদায়, এইটুকু শুধু রবে |
আর রবো কি রবো না এত কাছাকাছি, তুমি আছ বলে আমিও তো আছি,
আসুক আড়াল রবে চিরকাল, হৃদয়ের অনুভবে | বেশ তো---
 
 
 
 
আলতা পায়ের আলতো ছোঁয়া পড়েছে
আল দিয়ে কে গেছে কোথায় জানি না,
সবুজ ধানে শীষ যে ক’টি ঝরেছে,
শিস্ দিয়ে কোন ময়না কি গায় জানি না |
সারস পাখির শঙ্খবরণ পাখাতে
কে এলো আঁকা রোদের সোনা মাখাতে,
গাঙ্ শালিখের দলকে পাগল করেছে,
সে কার মরমের গোপন কথায় জানি না |
জানি না উথলে ওঠা ঝিলের জলে কে দিল ঢেউ,
শুধু জানি এই দেশেতে মনের মত এসেছে কেউ |
সময় ভুলে ফুটলো কলি অকালে
বটের ছায়া নামলো বুঝি সকালে,
যার মিতালীর স্বপ্নে হৃদয় ভরেছে,
যার রূপটি কেমন আর নামটি কি হয় জানি না |
 
 
 
 
আমার মনকে নিয়েই আমার যত ভাবনা
যেই না কারো কালো চোখে একটু আলো জ্বলতে দেখে,
ভোর হয়েছে ধরে নিয়ে অমনি মেলে পাখনা |
একটু নতুন ছন্দ পাবে, অমনি সে যে পথ হয়ে তার সঙ্গে যাবে |
স্বরলিপি করে তাকে বলবে হৃদয় গাক্ না |
আমার মন যে আমার মন বোঝে না তাই তো আমার ভয়,
আমি বোঝাই তাকে যা পেয়েছে সে কি অনেক নয় |
বুকের মাঝে সুখের বাসা দিলাম তাকে যতন করে,
সে তবু এক ভালবাসার বায়না ধরে---
কেবল বলে--- যা পেয়েছি কেউ তা নিয়ে থাক না ||
 
 
 
 
সেই মেয়েটি নয়নে দু’টি কাজল পরেছে
তার সে কালো চোখের আলোয় ভুবন ভরেছে
মুখে তার মিষ্টি হাসি সে যে সর্বনাশী
তবুও মনে মনে আমি তারেই ভালোবাসি
পথে যেতে অনুরাগে যদি তাঁর ছোঁয়া লাগে
তাইতো যাওয়া-আসা পথেই পথে ফিরে আসি
তবুও মনে মনে আমি তারেই ভালোবাসি
সেই মেয়ে তার নামটি ধরে বলবো কোনদিন এমনি করে
ভালো যদি বেসেই থাক দূরে দূরে কেন রাখ |
আমি অথৈ সাগর জলের ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভাসি
তবুও মনে মনে তারেই ভালোবাসি ||
 
 
 
 
মধুমতী যায় বয়ে যায় রে
কবির তুলিতে আঁকা, স্নেহ মমতা মাখা
আপনার মনেতে বয়ে যায় |
মধুমতী যায় বয়ে য়ায়
শ্যামলী নদীর তীরে, সন্ধ্যা নামে ধীরে ||
ঘরে ঘরে দীপ জ্বলে ছায়া দোলে পলে পলে
চাঁদ হাসে মধু জোছনায়, মধুমতী যায় বয়ে যায়
কত প্রেমিক প্রেমিকা আসে নীরঞ্জন
ঐ কুলে, মিশায়ে গেছে আঁখিজল |
তাই আলোতে ছায়াতে দুলি,
ছোট ছোট ঢেউ তুলি, বেদনায় করে টল্ মল্  |
মধুর করে তোলে , চুপি চুপি দোলে তালে  ||
ফেলে আসা সেই তিথি, দিবানিশি সাগরে মিলায় |
মধুমতী যায় বয়ে যায় |