অপরেশ লাহিড়ী
সামনে পিছে ডাইনে বামে
চলতি বাসে কিংবা ট্রামে
এখানে যাও সেখানে যাও
লাইন লাগাও লাইন লাগাও।।
হাট-বাজারে পথে-ঘাটে
হাসপাতালে খেলার মাঠে
ঘরের থেকে পা বাড়িয়ে
দেখবে আছে লোক দাঁড়িয়ে।
রেলের গাড়ির টিকিট কাটে
বায়স্কোপে শ্মশানঘাটে
এ দিকে চাও যে দিকে চাও
লাইন লাগাও লাইন লাগাও॥
মিষ্টি-মুখের মুচ্কি হাসি
চলবে না আর চলবে না আর চলবে না আর।
সব খানেতে লাইন আছে
লাইন রাখার আইন আছে
চলতি পথে সবার কাছে
আইন ভাঙার “ফাইন” আছে
নিয়ম কানুন নয় তো মিছে
আসলে পরে সবার পিছে
পিছনে যাও পিছনে যাও পিছনে যাও॥
এই কি পৃথিবী সেই ?
যেথায় আশার আলো ছলনা করে
চোখের পাতায় কান্না যে শুধু ঝরে
তবু কি মমতা পৃথিবীর বুকে নেই ?
এই কি পৃথিবী সেই ?
উপরে আলোর দুরন্ত শুদু খেলা
নিচে মানুষের হাহাকার সারাবেলা
অন্তবিহীন ব্যথা শুধু ছড়াতেই
এই কি পৃথিবী সেই ?
আঁধার যে রয় প্রদীপ শিখার নিচে।
কতদিন আর শুধে যেতে হবে দেনা
প্রাণের মূল্যে জীবনের বেচা-কেনা
অশ্রু সাগরে দু’টি চোখ ভরাতেই
এই কি পৃথিবী সেই ?
৩.
এই জীবন্ত নাটকের নাট্যশালায়
কেউ হাহা হিহি হাসছে,
এই ঘুরন্ত মঞ্চের অন্তরালে
চোখের জলে কেউ ভাসছে।
রূপকথা নয় তবু রূপকথা মনে হয়,
আছে কত কাহিনির লজ্জা
কেউ রাজা হবু আর কেউ গবু মন্ত্রী,
চকমকি বাহারের সজ্জা।
হাসি আর কান্নার, হৈ চৈ হল্লার
একটানা সুর ভেসে আসছে।
এই কানামাছি জীবনের ভোজবাজি নাটকের
নায়ক আর নায়িকার গল্প
হায়, চোখ বাঁধা রয় কারও চোখ থেকে অন্ধ
শোন সব কাহিনী সেই অল্প।
কেউ আলাদিন সেজে হায় যত সুখ মন চায়
সবটুকু তার খুঁজে পাচ্ছে,
কেউ আলিবাবা হয়ে ভাই হিজিবিজি রাস্তায়
সারাদিন ঘুরপাক খাচ্ছে।
এত ব্যথা পেয়ে মন তবু কেন অকারণ
মনকে ফের ভালোবাসছে।